জীবনডা হইলো একটা ইস্কুল, আর ব্যর্থতা হইলো সেই শিক্ষকের নাম। কিন্তু দুঃখের কথা হইলো, আমরা অনেক সময় এই শিক্ষাডা ঠিকঠাক লইতে পারি না। যখন আমরা কোন কাজে ব্যর্থ হই, তখন মন খালি নিজেরে গালি দেয়—”আমি কী ভুল করছি?”, “কেন আমার লগে খালি এমন অয়?”—এইগুলা প্রশ্ন কইরা আমরা নিজেরেই নিজে বাইন্ধা ফালাই। কিন্তু আপনে কী জানেন, এই প্রশ্নগুলাই আমগো সাফল্যের পথের মইধ্যে সব থেইকা বড় বাধা?

মনোবিজ্ঞানীরা কয়, আমাগো মগজডা ‘প্রশ্ন-উত্তর’ হিসাবে চলে। যখন আমরা উল্টাপাল্টা নেগেটিভ প্রশ্ন করি, তখন মগজ খালি সেই খারাপ কিছুর প্রমাণই খুইজ্জা বাইর করে। “আমি কেন খালি এই ভুলডা করি?”—এই প্রশ্নডা আপনের মগজে এমন একডা বিশ্বাস বসাইয়া দেয় যে, ভুল করাডাই আপনের স্বভাব। এর ফলে, আপনে এমন এক বিষাক্ত চক্রের মইধ্যে পইড়া যান, যেখানে ভুল করাডা আপনের অভ্যাস হইয়া যায়। আপনে না জাইনাও আপনার ব্যর্থতার কারণগুলা আপনার মগজে আরও পাকাপোক্ত কইরা লন। এইডা খালি আপনের আত্মবিশ্বাসই নষ্ট করে না, আপনের শেখার ক্ষমতাও কমাইয়া দেয়।

এই চক্রডা ভাঙতে হইলে আমাগো মনডারে নতুন কইরা সাজাইতে হইব। ভুলডারে ‘ব্যর্থতা’ না ভাইবা, বরং ‘শিক্ষা’ হিসাবে ধরেন। নিজের ভুল থেইকা কিছু শিখতে চাইলে নিজেকে জোরালো প্রশ্ন করেন:

“এই কাজ থেইকা আমি কী শিখছি?”

“পরেরবার আমি কী নতুন বুদ্ধি বা কাজের পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারি?

“এই ঝামেলা থেইকা বাইর হইয়া সফল হইতে আমার কোন কাজগুলা আরও ভালো কইরা শিখা উচিত?”

এই প্রশ্নগুলা আপনের মনরে সমস্যা থেইকা সরাইয়া সমাধান খোঁজার দিকে মনযোগী করায়। এইডা আপনের মগজে এমন খবর পাঠায় যে, আপনে ভুল থেইকা শিখতে পারেন এবং আপনেই সমাধানের একটা অংশ। তখন আপনের মন নতুন নতুন রাস্তা বাইর করা শুরু করে। এইডা এক ধরনের ‘গ্রোথ মাইন্ডসেট’ বা উন্নতির মানসিকতা তৈরি করে, যেইডা আপনেরে খালি ব্যর্থতা থেইকা বাইর হইতেই সাহায্য করে না বরং ভবিষ্যতে আরও বড় চ্যালেঞ্জ লড়তেও সাহায্য করে।

অতএব, পরেরবার যখন কোনো ভুল হইব, তখন নিজেরে জিগান—’আমি কী ভুল করছি?’—এর বদলে, ‘আমি এই ভুল থেইকা কি শিখতে পারি?’ কারণ জীবনের সব থেইকা বড় আবিষ্কার হইলো—মানুষ খালি তার ভুলের পুনরাবৃত্তিই করে না, তার ভুল থেইকা নতুন কইরা জন্মও লয়।

সহজ ভাষায় বলতে গেলে, ভুল করাডা জীবনের শেষ না, বরং নতুন কইরা শুরু করার একটা সুযোগ। আমরা আমাগো ভুল থেইকা খালি নিজেরে পুনরাবৃত্তি করি না,বরং সেই ভুলগুলোরে কাজে লাগাইয়া আরও শক্তিশালী এবং দক্ষ হইয়া নতুনভাবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারি। এইডাই হইলো “ভুল থেইকা নতুন কইরা জন্ম লওয়া”।

এক কথায়, ভুল করাডা দোষের না, বরং সেই ভুল থেইকা কিছু না শিখাটাই দোষের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *